/ সাজানো হচ্ছে পুরো শহর নতুন রূপে /
২৪খবরবিডি: 'যশোরের রাত পাল্টে গেছে। হৈ হৈ রব শহরের প্রতিটি প্রান্তে। কারণ, বহুদিন পর আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। করোনা মহামারির পর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রথম জনসভায় ভাষণ দেবেন তিনি। এজন্য সপ্তাহব্যাপী প্রস্তুতিমূলক কর্মযজ্ঞ চলছে। এখন বঙ্গবন্ধু কন্যার অপেক্ষায় যশোরবাসী।'
'২৪ নভেম্বর যশোরের শামস্-উল হুদা স্টেডিয়ামে বিশাল জনসভায় ভাষণ দেবেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ঐতিহাসিক এই ভেন্যুসহ পুরো শহর সমাবেশস্থলে পরিণত করতে গত ৭ দিন ধরে ব্যস্ত সময় পার করছেন দলটির নেতারা। তারা বলছেন, এই জনসভায় স্মরণকালের জনসমাগম ঘটাবে। শেখ হাসিনার আগমনকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা এখন যশোরজুড়ে।'
'আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, ৫০ বছর আগে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যশোরের যে স্থানে জনসমুদ্রে ভাষণ দিয়েছিলেন, সেখানেই ভাষণ দেবেন তার কন্যা শেখ হাসিনা। করোনাকালের তিন বছর পর আওয়ামী লীগের নির্বাচনী জনসভায় প্রথমবারের মতো সশরীরে অংশ নিচ্ছেন তিনি। এই সমাবেশ থেকেই দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের রাজনৈতিক বার্তা দেবেন শেখ হাসিনা। অন্যান্য নির্বাচনের আগে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট থেকে শুরু হতো, কিন্তু এবার যশোর থেকে সূচনা হচ্ছে।'
/ শামস্-উল হুদা স্টেডিয়ামে চলছে কর্মযজ্ঞ /
'সার্বিক বিবেচনায় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতা ও বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিনের নির্দেশনায় যশোরের আওয়ামী লীগ নেতারা জনসভার প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন করেছেন। তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাদের নিয়ে জনসভাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ সময় আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক ও এস এম কামাল হোসেন, বাগেরহাট-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সারহান নাসের তন্ময়, যশোর সদর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদসহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ বলেন, 'বঙ্গবন্ধু যেখানে ভাষণ দিয়েছিলেন, সেই স্থানে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা ভাষণ দেবেন। এই জনসভাকে জনসমুদ্রে পরিণত করতে আমরা যাবতীয় প্রস্তুতি নিচ্ছি। সাত দিন ধরে এই কর্মযজ্ঞ চলছে। বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিনসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা এরই মধ্যে জনসভাস্থল পরিদর্শন করেছেন। জনসভাকে কেন্দ্র করে যশোরসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের মাঝে উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা যাচ্ছে।'
'মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) যশোর শহর ও জনসভাস্থল ঘুরে দেখা গেছে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আগমন উপলক্ষে সর্বত্র উৎসবের আমেজ। নতুন রূপে সাজানো হচ্ছে পুরো শহর, সংস্কার হচ্ছে রাস্তা-ঘাট। বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন, দেয়াল লেখন, আলোকসজ্জা ও তোরণ নির্মাণসহ ব্যাপক সাজসজ্জার কাজ চলছে পুরোদমে। চলছে মাইকিংসহ প্রচার-প্রচারণাও। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে উন্মুখ হয়ে আছেন জেলার সর্বস্তরের মানুষ।
'জনসভা ঘিরে সপ্তাহব্যাপী কর্মযজ্ঞ, প্রধানমন্ত্রীর অপেক্ষায় যশোরবাসী'
জনসভার প্রস্তুতির বিষয়ে জানতে চাইলে যশোর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদুল ইসলাম মিলন বলেন, 'জনসভাকে জনসমুদ্রে পরিণত করতে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। স্টেডিয়ামের মাঠ প্রশস্ত করার পাশাপাশি সমাবেশে আগত লোকজনের সার্বিক সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বড় পর্দায় সমাবেশ ও প্রধানমন্ত্রীর ভাষণ দেখার ব্যবস্থা করা হবে।'
'আশা করছি, পাঁচ লাখের বেশি মানুষের সমাগম হবে।'স্থানীয় আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা জনসভা সফল করতে দফায় দফায় প্রস্তুতি সভা করেছে। যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের নেতৃত্ব সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কমিটির একটা টিম যশোরে এসে স্থানীয় নেতাদের নিয়ে জনসভা সফল করতে প্রস্তুতি সভাও করেছে। আওয়ামী লীগের অন্যান্য অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতারাও জনসভাকে ঘিরে প্রস্তুতি নিয়েছে। জনসভায় নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়েছে জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। গত ২০ নভেম্বর নড়াইলের এক অনুষ্ঠানে বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন বলেছিলেন, '২৪ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যশোরের জনসভা জনসমুদ্রে পরিণত হবে। জনসভায় লাখো লোকের জনসমাগমে প্রমাণ হবে দেশে কারা থাকবে,বিএনপি-জামায়াত না স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি।' যশোরবাসী বলছেন, বিগত কয়েক বছরে স্বপ্নের পদ্মা সেতু ও মধুমতি সেতুসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যোগাযোগে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। এর ফলে যশোরসহ এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক, সামাজিক অবস্থা এবং মানুষের জীবনযাত্রায় উন্নয়ন ঘটেছে। এ উন্নয়ন ও দিন বদলের নেতৃত্ব দেওয়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বরণ করতে এবং তার মুখে আগামীর বার্তা শুনতে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। শহরের প্রধান সড়কের পাশের একটি চায়ের দোকানি আব্দুল্লাহ বলেন, বঙ্গবন্ধুকে তো দেখিনি। ২০১২ সালে ঈদগাহ মাঠে নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দিয়েছিলেন তারই কন্যা শেখ হাসিনা। তাকে সে সময় চোখে দেখেছি। এখন তিনি আবার আসছেন, তাকে বরণ করতে আমরা প্রস্তুত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কি বলেন, তা শোনার অপেক্ষায় আছি।'
'রিকশা চালক আতাউর রহমান বলেন, গত ১৩ বছরে যশোরের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। এ জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আমাদের এমপি কাজী নাবিল আহমেদকে ধন্যবাদ জানাই। জনসভা উপলক্ষে সারা শহর নতুন সাজে সেজেছে। আমরা এখন প্রধানমন্ত্রীর আসার অপেক্ষায় রয়েছি। স্থানীয় স্কুল শিক্ষক শামসুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বপ্নের পদ্মা সেতু করে দিয়েছেন। নড়াইলে মধুমতি সেতুও করেছেন তিনি। এখন যশোর থেকে রাজধানীতে খুব সহজে যাতায়াত করা যাচ্ছে। রাস্তা-ঘাট, ব্রিজ-কালভার্ট,স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসাসহ অনেক উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে যশোরে। এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা এবং মানুষের জীবনযাত্রায় উন্নয়ন ঘটেছে। পুরো শহরজুড়ে নিশ্ছিদ্র ও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে তোলার কথা জানিয়েছে প্রশাসন। এর মধ্যে শহরে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন, গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি, জনসভা মঞ্চ ঘিরে নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলা।'